শুয়োর ইসলামে কেন হারাম । শুধু মুসলিম নয় সব মানুষের দেখা দরকার

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আসসালামুয়ালাইকুম , মুসলিম ভাই ও বোনেরা কেমন আছেন ?

আজকে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ শুয়োর সমপর্কে ।
হিন্দু দাদা বাবুদের নিয়ে আসলে কিছু বলি না বলতে চাই ও না । তবে ইদানিং যা শুরু হয়েছে আমাদের গরু খাওয়া নিয়ে অনেক কটুক্তি পর্যন্ত করা হয় । গরু নিয়েও আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ তার আগে তাদের শুয়োর নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয় । মেডিক্যল সাইন্স আমাদের বলে , যদি আপনি সিংহ , বাঘ এদের গোশ্ত খান , তাহলে এতে আপনার স্বভাব চরিত্র হিংস্র হবে । সিংহের মত আচরণ , করবেন ।
তাহলে ভাবুন শুয়োরের গোশ্ত যারা খাচ্ছে তাদের স্বভাব চরিত্র শুয়োরের মত হিংস্র হবে কিনা ?
প্রশ্ন আসতে পারে যে , আমরা গরুর গোশ্ত খাওয়াই উগ্রপন্থি হয়ে গেছি ।  তাদের কে দেখিয়ে দেওয়া দরকার গরু, ছাগল , ভেড়া , দুম্বা এই গুলো শান্তপ্রিয় গৃহপালিত প্রাণী । কাজেই সেগুলো খেলে মোটেও উগ্র হওয়ার কথা নয় ।
যাই যাক সে কথা সেগুলো অন্য টপিক । আমি যেটি নিয়ে কথা বলছি সেটি নিয়েই বলা দরকার । আমি আমার মুসলিম ভাই দের জন্য এটি দিচ্ছি পাশাপাশি সব ধর্মের ভাই দের কেও পড়ার অনুরোধ করি । যেহেতু শুয়োর খেলে তো শুধু মুসলমানরাই আক্রান্ত হবে না ... শুয়োর খেলে , মুসলিম হোক আর অমুসলিম হোক , সবাই আক্রান্ত হবে ।
তাই মানবতা দেখিয়ে পোষ্ট টি না করলেই না ।
প্রথমেই শুরু করবো মহাগ্রন্থ আল কোরআন দিয়ে ।
কোরআনে শুয়োর নিষিদ্ধ:-

পবিত্র কোরআন বলছে:-


إِنَّمَا  حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ وَالدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنزِيرِ وَمَا أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللّهِ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلاَ عَادٍ فَلا إِثْمَ عَلَيْهِ إِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকর মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ ব্যাতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।

                                                                                                              সুরা বাকারা:173 নাম্বার আয়াত

আবারো দেখুন উল্লেখ্য আছে:-

حُرِّمَتْ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةُ وَالْدَّمُ وَلَحْمُ الْخِنْزِيرِ وَمَا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللّهِ بِهِ وَالْمُنْخَنِقَةُ وَالْمَوْقُوذَةُ وَالْمُتَرَدِّيَةُ وَالنَّطِيحَةُ وَمَا أَكَلَ السَّبُعُ إِلاَّ مَا ذَكَّيْتُمْ وَمَا ذُبِحَ عَلَى النُّصُبِ وَأَن تَسْتَقْسِمُواْ بِالأَزْلاَمِ ذَلِكُمْ فِسْقٌ الْيَوْمَ يَئِسَ الَّذِينَ كَفَرُواْ مِن دِينِكُمْ فَلاَ تَخْشَوْهُمْ وَاخْشَوْنِ الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا فَمَنِ اضْطُرَّ فِي مَخْمَصَةٍ غَيْرَ مُتَجَانِفٍ لِّإِثْمٍ فَإِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে মৃত জীব, রক্ত, শুকরের মাংস, যেসব জন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গকৃত হয়, যা কন্ঠরোধে মারা যায়, যা আঘাত লেগে মারা যায়, যা উচ্চ স্থান থেকে পতনের ফলে মারা যা, যা শিং এর আঘাতে মারা যায় এবং যাকে হিংস্র জন্তু ভক্ষণ করেছে, কিন্তু যাকে তোমরা যবেহ করেছ। যে জন্তু যজ্ঞবেদীতে যবেহ করা হয় এবং যা ভাগ্য নির্ধারক শর দ্বারা বন্টন করা হয়। এসব গোনাহর কাজ। আজ কাফেররা তোমাদের দ্বীন থেকে নিরাশ হয়ে গেছে। অতএব তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। অতএব যে ব্যাক্তি তীব্র ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে; কিন্তু কোন গোনাহর প্রতি প্রবণতা না থাকে, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল।
সূরা মায়েদাহ: ৩ নাম্বার আয়াত 


আবারো উল্লেখ্য আছে দেখুন:-
قُل لاَّ أَجِدُ فِي مَا أُوْحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَى طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلاَّ أَن يَكُونَ مَيْتَةً أَوْ دَمًا مَّسْفُوحًا أَوْ لَحْمَ خِنزِيرٍ فَإِنَّهُ رِجْسٌ أَوْ فِسْقًا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللّهِ بِهِ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلاَ عَادٍ فَإِنَّ رَبَّكَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
আপনি বলে দিনঃ যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোন হারাম খাদ্য পাই না কোন ভক্ষণকারীর জন্যে, যা সে ভক্ষণ করে; কিন্তু মৃত অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস এটা অপবিত্র অথবা অবৈধ; যবেহ করা জন্তু যা আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গ করা হয়। অতপর যে ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে এমতাবস্থায় যে অবাধ্যতা করে না এবং সীমালঙ্গন করে না, নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা ক্ষমাশীল দয়ালু।
সূরা আন’আম:১৪৫ নাম্বার আয়াত


আবারো দেখুন:-
إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ وَالْدَّمَ وَلَحْمَ الْخَنزِيرِ وَمَآ أُهِلَّ لِغَيْرِ اللّهِ بِهِ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلاَ عَادٍ فَإِنَّ اللّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা জবাই কালে আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারণ করা হয়েছে। অতঃপর কেউ সীমালঙ্ঘন কারী না হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়লে তবে, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সূরা নাহল: ১১৫ নাম্বার আয়াত 
----------------------------------------------------------------------------------------------
তো মুসলিম ভাই রা কি বুঝলেন ??? কোরআনুল কারীমে পরিষ্কার ভাবে নিষেধ করা আছে । অবশ্য আমাদের দাদাবাবুরা এই গুলো মানবেনা । সমস্যা নেই তারা যেত মানে সেসব জিনিষই দেখাবো একটু পর । পবিত্র কোরআন এটিকে হারাম করেছে । তাই আমাদের দরকার শুয়োর খাওয়া টোটালিই না না এবং না বলে দেওয়া ।
আসুন দেখি খিষ্টানধর্মে শুয়োর খাওয়া জায়েজ আছে কি না ???
---------------------------------------------------------------
আমি যতটুকু জানি একজন খিষ্টান এ ধর্মগ্রন্থের উদ্ধতিতে যথাসম্ভব ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারে ।
বাইবেল যদি আপনি পরেন সেখানে দেখবেন খিষ্টানধর্মে শুয়োর কে চূরান্ত ভাবে নিষেধ করা হয়েছে ।
বাইবেল যদি আপনি খুলেন সেখানে দেখতে পারবেন লেভিটিকাস গ্রন্থের মধ্যে শূকরের মাংস খাওয়া নিশেধ করা হয়েছে:-
7And the swine, though he divide the hoof, and be clovenfooted, yet he cheweth not the cud; he is unclean to you.
(আর শূকর যদিও তার খুর দু”খন্ডে বিভক্ত এবং খুর বিশিষ্ট পাওয়র অধিকারী এবং খাদ্য চিবিয়ে খায় জাবর কাটে না , তবুও ওটা তোমার জন্য নোংরা)
8Of their flesh shall ye not eat, and their carcase shall ye not touch; they are unclean to you.
(এগুলোর মাংস তুমি খাবেনা এবং এগুলোর মৃতদেহ তুমি কখনো স্পর্শ করবেনা , এগুলো তোমার জন্য নোংরা অপবিত্র )

                  এটি পাবেন বাইবেলের লেভিটিকাস (Leviticas 11:7-8)

সরাসরি পরুণ:- 



আবারো বাইবেলের ডিউটারনামী গ্রন্থেও বলা হয়েছে 



And the swine, because it divideth the hoof, yet cheweth not the cud, it is unclean unto you: ye shall not eat of their flesh, nor touch their dead carcase.


এর বাংলা হলো:-
( আর শুকর কেননা তার দ্বিখন্ডিত , যদিও চিবিয়ে খায় , জাবর কাটে না , এটা তোমার জন্য নোংরা , এগুলোর মাংস তুমি খাবেনা , আর না এগুলোর মৃতদেহ স্পর্শ করবে । (ডিউটারনামি ১৪:৮ )

সরাসরি পরুন:-


খিষ্টানধর্মও কিন্তু একথা স্পষ্ট বলছে শুয়োর নিষিদ্ধ তাদের জন্য ।

এবার আসুন মেডিক্যাল সাইন্স কি বলে ।
শুকরের মাংস খাওয়াতে কি রোগ হতে পারে:-

সঠিক হারে যদি সাইন্স দিয়ে যুক্তি পেশ করা হয় , তাহলে , সেটি অবশ্য নাস্তিকরা মানতে বাদ্ধ । একজন মানুষ যদি শুকরের মাংস খায় তাহলে সে ক্ষেত্রে তার শরীরে  ৭০ টি বিভিন্ন রোগ হতে পারে ।  বিভিন্ন ধরনের কৃমি হতে পারে । যেমন: গোলাকার কৃমি , সূচালো কৃমি , বক্র কৃমি ইত্যাদি আর সব চাইতে যেটি বড় রোগ হতে পারে  সেটি , টায়েনিয়া সোলিয়াম মানে ফিতা কৃমি (Taenia Solium) .

এটি পেটের ভিতর অনেক লম্বা হয়ে যায় ।
স্যার ডক্টর জাকির নায়েক বলেন:- এই কৃমি যদি কারও শরীরে হয় ,, এটি মস্তিষ্কে ঢুকলে স্মতিভ্রষ্টের কারণ ঘটে , এটি হাতে ঢুকলে হাতের ক্ষমতা নষ্ট হতে পারে , যেই অংগে এটি প্রবেশ করবে সেটিকে নষ্ট করে ফেলবে । চোখে ঢুকলে চোখ নষ্ট হবে । এভাবে ফিতাকৃমি মারাত্মক ক্ষতি হবে ।
এর পরেও আরোও আছে ভয়ংকর ত্রিচুরা টিচুরাসীস (Trichura Tichurasis)


শুকুরের মাংস নিয়ে একটি ভূল ধারণা যে ভালোভাবে রান্না করলে এই জীবাণূ টি চলে যেতে পারে , এই জন্য অমেরিকায় এ নিয়ে গবেষণা চালানো হয় । তাতে দেখা যায় , যে 24 জন রোগীর মধ্য ২২ জনই শূকরের মাংস ভালোভাবে রান্না করে খেয়েছে তবুও সেটি নষ্ট হয় নি । এতে প্রমানিত যে ফিতা কৃমির এ ডিম ওভা রান্নার সাধারণ তাপমাত্রায় বিনষ্ট হয় না ।

শূকর মাংসে চর্বি থাকে বেশি:-
এখন চর্বি জাতীয় জিনিষ যদি বেশি খান তাহলে আপনার অবস্থা কি হতে পা ের আপনি নিজেই ভাবুন । এর ফলে আপনার সারা শরীর চর্বি দিয়ে ভরে যাবে ।  হার্ট জাম হয়ে যাবে । আর শূকরের মাংসে এতটাই চর্বির পরিমাণ বেশি যে , এ জাতীয় চর্বি মিলা - উপশিরায় জমে উচ্ছ রক্তচাপ মানে হাইপারটেনশন এবং হার্ট এটাক এর কারণ হতে পারে । সে দিক থেকে বলতে গেলে এটি অসম্ভব কিছু নয় যে এমেরিকায় 50% মানুষ হাইপারটেনশনে ভোগে ।



শূকর নোংরা এবং নিলজ্জ প্রাণী:-

শূকর  পৃথিবীর বুকে সবচাইতে নোংরা প্রাণী বলা যেতে পারে । এটি দেখবেন যত নোংরা জায়গা সেসব জায়গার থাকে এবং মানুষের মল , বিভিন্ন আবর্জনা ‍খেতেই পছন্দ । এখন আপনি বলতে পারেন এমেরিকাতে বিভিন্ন জায়গায় তাদের জণ্য আলাদা সুন্দর সুন্দর গোডাউন করা হয়েছে ,,,, ভাইজান তবুও দেখবেন গাদাগাদি থাকতেই এরা ভালো বাসে । প্রকৃতগত  ভাবেই এরা এরকম নোংরা । যতই পরিষ্কার রাখুন না কেন এরা নোংরাই পছন্দ করে । এরা খুব আনন্দের সাথে নিজেদের সংগীদের মল মূত্র খেয়ে চোখ মুখ নাড়াচারা করে থাকে ।

আবারো দেখুন প্রাণীটি কেমন নিলজ্জপূর্ণ । আমার মনে হয় এটিই একমাত্র প্রাণী যে , নিজের স্ত্রী দের সাথে সহবাস করার জন্য ,  আরও ২ , ৪ টা শুয়োর ডেকে নিয়ে এসে  সহবাস করে । দেখুন সাইন্স কিভাবে মিলে গিয়েছে , পশুর স্বভাব এখন মানুষের মদ্ধ্যেই দেখা যায় যেমন এমেরিকায় ্এখন একজন আরেকজনের স্ত্রীর থাকা সহবাস কোন ব্যাপারই না । এমেরিকায় এ জিনিষটি প্রচুর । আবার এমেরিকায় মানূস শুকর ও খাচ্ছে প্রচুর । তাহলে িএটা তো সত্য শুকরের স্বভাব তাদের ভিতরে বিদ্যামান । ভারতে দেখুন , এরকম কাহীনি অহরহ ।


এখন ভাবুন আপনি যদি শুকরের মাংস খেতে অভ্যস্ত হন আপনি কিন্তু শুকরের মতেই হতে অভ্যস্ত হবেন কিছুটা হলেও এটাই স্বাভাবিক আজকের সাইন্স এর মতবাদ অনুযায়ী ।

যাই হোক আমাদের হিন্দু দাদা বাবুদের বলি আপনারাই ভাবুন  আপনারা কি করবেন । আমার কোন কমেন্ট নেই । উপরের লিখা গুলো লিখতে আমাকে ব্যাপক সাহায্য করেছে স্যার ডক্টর জাকির নায়েক তার লিখা ইসলাম সমপর্কে অমুসলিমদের সাধারণ প্রশ্নের জবাব এই বই এর ৪৩ পৃষ্টায় উনি এসব কথা গেুলো বলেছেন ।

যাই হোক খৃষ্টান ভাইদের বলবো বাচতে চান ? তাহলে আজই শুয়োর খাওয়া বন্ধ করুন ।


                                                                                                                      - শাফিউল আলম




















Post a Comment

0 Comments